মানবাধিকার ও পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থার আড়ালে ‘এমএলএম’ ব্যবসার মাধ্যমে লাখ লাখ গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এক প্রতারক চক্র। মঙ্গলবার গভীর রাতে রাজধানীর বাড্ডা এলাকা থেকে এই প্রতারক চক্রের মূল হোতাসহ ১১ জনকে আটক করেছে র্যাব।
গ্রেফতারকৃতরা প্রতারণা চক্রের মূল হোতা বলে জানান। অভিযুক্ত আবদুল কাদের (৪৪), তার সঙ্গী মির্জা নাসির উদ্দিন (২৫), মাহফুজুর রহমান (৫০), এআর আবদুল মোমেন (৪৯), মেহেদী হাসান (২৫), আমজাদ হোসেন (৩৪), মঞ্জুরুল হাসান খান (৩৫), আবদুল বারিক (৩৫) রুহুল আমিন (২৫), মোছা. মুন্নি (৩০) ও নিলুফা ইসলাম নিপা (৩৪)
এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪টি কম্পিউটার, ৪টি ল্যাপটপ, ১৭টি মোবাইল ফোন, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই, ভাউচার, চুক্তিপত্র, প্যাড, সিল ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়। অফিসে আটক একজন ভিকটিমকেও উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১ এর অধিনায়ক কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র মানবাধিকার ও পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থার আড়ালে এমএলএম ব্যবসার নামে প্রতারণা করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করছে। তারা তাদের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য মানবাধিকার ও পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থার নাম ব্যবহার করছে।
অভিযুক্তরা সমাজের নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তদের টার্গেট করে এবং প্রতিমাসে ১০,০০০ টাকা থেকে ১২৫,০০০ টাকা বেতনে চাকরি দেওয়ার জন্য প্রলুব্ধ করে তাদের সংগঠনের দাতা সদস্য করে। এজন্য জনপ্রতি ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। চক্রটি ইতিমধ্যে কয়েক হাজার মানুষকে কোটি কোটি টাকা প্রতারণা করেছে।
চক্রের মূল মালিক আব্দুল কাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১ এর সিও জানান, কাজের নামে দাতা সদস্যদের দিয়ে এমএলএম মডেলে নতুন দাতা সদস্য সংগ্রহ করতেন আব্দুল কাদের। ভুক্তভোগীদের বলা হয়, ৩০ হাজার টাকা দিয়ে দাতা সদস্য হওয়ার পর বেতন হবে ১০ হাজার। সূত্র বা তথ্যদাতাদের কাজ দেওয়া হয়েছিল। এলাকায় বাল্যবিবাহ হলে, দরিদ্র পরিবারের মেয়ে বিয়ে দিতে না পারলে এবং ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদী থেকে বালু তোলা হলে সংস্থার কর্মকর্তাদের জানাতে বলা হয়।
এত সহজ চাকরির আশায় ৩০ হাজার টাকা দিয়ে দাতা সদস্য হওয়ার পর নতুন দাতা সদস্য আনতে বলা হয়। আপনি যদি নতুন সদস্যদের আনতে না পারেন তবে আপনাকে অর্থ প্রদান করা হবে না। কিন্তু টাকা নেওয়ার আগে লোক সংগ্রহের বিষয়ে কিছু বলত না চক্রটি।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, টাকা নিয়ে প্রতারণার শিকার হয়ে বাড্ডা অফিসে গেলে মামলা পুলিশের কাছে সোপর্দ করার হুমকি দেয় চক্রটি। অধিকাংশ সদস্য সমাজের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের গোষ্ঠীভুক্ত।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত Choice TV News 2023