কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলায় সাবেক ইউপি সদস্যকে হত্যার দায়ে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কটিয়াদী উপজেলার মধ্যভাট্টা এলাকার মৃত সিন্দু ভূইয়ার ছেলে মো. ফোরকান ভূঁইয়া (৪৮), জামশেদ ভূঁইয়ার ছেলে মো. শাহেদ ভূঁইয়া (৩৪) ও মৃত ধুলু ভূঁইয়ার ছেলে মো. আঙ্গু ভূঁইয়া (৫৮)। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি একই এলাকার মৃত জামশেদ ভূইয়ার ছেলে। মোস্তফা ভূঁইয়া (৪৬)। রায় ঘোষণার আগেই আসামি জামশেদ ভূঁইয়া মারা যাওয়ায় আদালত তাকে মামলা থেকে খালাস দেন।
কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (ভারপ্রাপ্ত) জগেশ্বর রায় এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, মামলার রায়ে আমরা খুশি। এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
মামলার সারসংক্ষেপে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৯ আগস্ট সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম রতন ভূঁইয়া ভট্ট নতুন বাজার থেকে প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা বলে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় আসামিরা ফোরকান ভূঁইয়ার বাড়ির উত্তর পাশের কাঁচা সড়কে পৌঁছালে ফোরকান ভূঁইয়ার লোকজন লাঠি, ছুরি, চাপাতি, লোহার রডসহ রতনের পথ অবরোধ করে। ফোরকান ভূঁইয়া তার লোকজনকে রতনের জীবন শেষ করার নির্দেশ দেন। এই আদেশ পাওয়ার সাথে সাথে তারা রতনকে অতর্কিত করে।
এ সময় ফোরকান, জামশেদ, শাহেদ ও আঙ্গু তাদের হাতে থাকা দা, চাপাতি দিয়ে রতনকে কুপিয়ে হত্যা করে। বেত মাটিতে পড়ে গেলেও তারা তাদের হাতে লোহার রড দিয়ে তাকে মারতে থাকে। রতনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লেগেছে। পরে রতনকে উদ্ধার করে প্রথমে ভাগলপুর জহিরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হামলার ৬ দিন পর ৫ সেপ্টেম্বর মারা যান তিনি।
নিহত রতন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার চাচাতো ভাই আনার ভূঁইয়া বাদী হয়ে ৩০ আগস্ট কটিয়াদী মডেল থানায় মামলা করেন। পরে রতন মারা গেলে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। তদন্ত শেষে কটিয়াদী থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাখাল দেবনাথ ২০১৪ সালের ৮ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে মঙ্গলবার এ মামলার রায় দেন আদালত।
আসামির স্বজনরা জানান, এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আমাদের স্বজনরা জড়িত নয়।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন কিশোরগঞ্জ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (ভারপ্রাপ্ত) জগেশ্বর রায়। আসামির পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট আজিজুল হক মিন্টু।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত Choice TV News 2023